গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার এর কাজ ও সুযোগ সুবিধা কি কি

গ্রামীণ ব্যাংক পৃথিবীর একমাত্র নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রতিষ্ঠান। এখানে একজন শিক্ষানবিশ অফিসারকে প্রশিক্ষণ শেষে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের দায়িত্ব দেয়া হয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার এর কাজ ও সুযোগ সুবিধা কি কি তা জানতে হলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

গ্রামীণ-ব্যাংকের-প্রশিক্ষনার্থী-অফিসারের-আর্থিক সুবিধা-কিকি

গ্রামীণ ব্যাংকের একজন শিক্ষানবিশ অফিসার তথা একজন নতুন যোগদানকৃত ব্রাঞ্চ ম্যানেজার এর কাজের ধরণ, দায়িত্ব কর্তব্য এবং কি কি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন তা বিস্তারিতভাবে এই পোস্টের মাধ্যমে আলোচনা করা হয়েছে।

সূচীপত্রঃ গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার এর কাজ ও সুযোগ সুবিধা

 ‍গ্রামীণ বাংকের শিক্ষানবিশ অফিসারের কাজ কিকি ঃ 

গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসারকে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে পোস্টিং দেয়া হয়ে থাকে।দেশের  অন্যান্য ব্যাংকের মতো এখানে ৯টা ৫টা অফিস করার চিন্তা থাকলে এই চাকুরী আপনার জন্য নয়।  গ্রামীণ ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে চাকুরী করতে হলে আপনাকে চাকুরী নয়, কাজ করার মানসিকতা নিয়ে আসতে হবে। দেশের যে কোন জায়গায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করার মানসিকতা থাকা প্রয়োজন। এখানে অফিস টাইম শুরু হয় সকাল ৭ টায় কিন্তু শেষ বলে কথা নেই। শেষ হবে আপনার কাজের দক্ষতা, কর্ম এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং টিম সহকর্মীদের মানসিকতার উপর।

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিটি ব্রাঞ্চে সাধারণত ৫ থেকে ১০ জন সহকর্মী এক সাথে কাজ করে থাকেন। এটি পুরোটাই একটা টিম ওয়ার্ক। টিমের একজনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অফিসের কাজ শেষ করা সম্ভব হয় না। 

একজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে সকালে সবার আগে অফিসে আসতে হয়। সকল সহকর্মীকে দিনের উল্লেখযোগ্য কাজের সংক্ষিপ্ত একটা ব্রিফ দিয়ে একযোগে ফিল্ডে বের হয়ে যেতে হয়। কেন্দ্র পরিদর্শন, ঋণের ব্যবহার দেখা, নতুন সদস্য অন্তর্ভূক্তি, বড় ঋনীদের কাজের ক্ষেত্র যাচাই, অনিয়মিত ঋণীদের সাথে যোগাযোগ, আমানতকারীদের সাথে যোগাযোগ, ঋণ বিতরণ, আমানতের টাকা প্রদান...ইত্যাদি একজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের দৈনন্দিন কাজের অংশ। 

এছাড়াও অফিসের কাজের ফাঁকে এলাকার প্রভাবশালী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় প্রশাসন এবং সমাজের সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখা ও সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখাও একজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাজের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।

চাকুরীতে যোগদান ও প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়াঃ 

প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে। গ্রামীণ ব‌্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রশিক্ষনার্থী অফিসার পদে যোগদান করতে হয়। সেখানে  শুন্য পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শেষে হাতে কলমে কাজ শেখার জন্য ফিল্ড পর্যায়ে পাঠানো হয়। গ্রামীণ ব‌্যাংকের একটি শাখার যাবতীয় কাজ দৈনন্দিন কিভাবে পরিচালিত হয়ে থাকে, সেটিই মুলতঃ শেখার জন‌্য শাখায় পাঠানো হয়ে থাকে। প্রধান কার্যালয়ের অ‌্যাসাইনমেন্টগুলো শাখায় বসেই কমপ্লিট করতে হয়।

    প্রায় দুই মাস গ্রামীণ ব‌্যাংকের শাখায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষ হলে আবার প্রধান কার্যালয়ে ডাকা হয়। সেখানে প্রশিক্ষণের মডিউল এর উপর ভিত্তি করে কয়েকদিন ক্লাশ এবং পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে চুড়ান্ত ভাবে গ্রামীণ ব‌্যাংকের শাখা পর্যায়ে পোস্টিং দেয়া হয় ম‌্যানেজার হিসেবে। 

গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসারের বেতন কতঃ

গ্রামীণ ব‌্যাংকের একজন শিক্ষানবিশ অফিসার  ব‌্যাংকে যোগদানের শুরু থেকে ১বছর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ পিরিয়ডের আওতায় থাকেন। এই সময় গ্রামীণ ব‌্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার এর আর্থিক সুযোগ সুবিধা নিম্নরুপ হয়ে থাকেঃ

১। গ্রামীণ ব‌্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার শাখায় যোগদানের প্রথম দিন থেকেই প্রতি কর্মদিবসে ৪০০/- (চারশত টাকা) হিসেবে লাঞ্চসাবসিডি পেয়ে থাকেন।

২। মাসের প্রথম শনিবার বাদে প্রতি শনিবার অনিয়মিত ঋনীদের সাথে যোগাযোগ কর্মসুচীর জন্য ২০০/-(দুইশত) টাকা হিসেবে টিফিন ভাতা পেয়ে থাকেন।

৩। মাসিক মোবাইল ভাতা বাবদ ৫০০/-(পাঁচশত)টাকা পেয়ে থাকেন।

৪। মাসিক যাতায়াত ভাতা বাবদ ২৫০০/-(দুই হাজার পাঁচশত)টাকা পেয়ে থাকেন।

৫। অফিসের কাজে ব্যবহার করার জন্য(কমপক্ষে ৮০০/- বা ততোধিক মূল্যমানের)ক্যাশ ক্যারিং ব্যাগ পেয়ে থাকেন।

৬। জুতা কেনার জন‌্য জুতার ভর্তূকী বাবদ ৭০০/-(সাতশত) টাকা পেয়ে থাকেন।

৭। রেইনকোর্ট কেনার জন্য রেইনকোর্টের ভর্তূকী বাবদ ১০০০/- (এক হাজার) টাকা পেয়ে থাকেন।

৮। প্রাথমিক ভাবে অফিসের ফিল্ড পরিদর্শনের কাজে সাইকেল কেনার জ‌ন‌্য বিনা সুদে কমপক্ষে ১০,০০০/-(দশ হাজার)টাকা সাইকেল ‍ঋণ পেয়ে থাকেন।

৯। যোগদানের  শুরু থেকে প্রথম ০৬মাস ১ম পর্ব হিসেবে বিবেবিত হয়। এসময় প্রশিক্ষণ ভাতা হিসেবে মাসে ১৩,০০০/-(তের হাজার) টাকা পেয়ে থাকেন। 

১০। প্রথম ৬ মাস কাজের পারফরমেন্স এর উপর ভিত্তি করে আবারো প্রধান কার্যালয়ে ডেকে পরীক্ষা নেয়া হয়। পাশ করলে ২য় পর্বে উত্তীর্ন হতে পারেন। পরের ছয় মাস ২য় পর্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। এ সময় প্রশিক্ষণ ভাতা হিসেবে মাসে ১৫,০০০/-(পনের হাজার)টাকা পেয়ে থাকেন।

গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের বেতন কতঃ

গ্রামীণ ব্যাংকের একজন শিক্ষানবিশ অফিসার এর এক বছর প্রশিক্ষণ পিরিয়ড বা শিক্ষানবিশ সময় কাল শেষ করার পর স্কেল(স্থায়ীকরণ)পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে তাঁকে চুড়ান্তভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

   গ্রামীণ ব্যাংকের একজন শিক্ষানবিশ অফিসার সিনিয়র অফিসার পদে যোগদানের প্রথম মাস থেকেই বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় বেতন স্কেল এর ৯ম গ্রেড(টাকা২২০০০-২৩১০০-২৪২৬০ ...৫৩০৬০)অনুযায়ী বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। যা বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণীর একজন কর্মকর্তার সমমান।

গ্রামীণ-ব্যাংকের-প্রশিক্ষনার্থী-অফিসারের-আর্থিক সুবিধা-কিকি

শিক্ষানবিশ অফিসারের মতো একজন সিনিয়র অফিসার ও উপরিউক্ত ১-৮নং ক্রমিক পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তির পাশাপাশি আরো যে সকল আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

বেতন-ভাতা /বোনাস ঃ

গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার এর আর্থিক সুযোগ সুবিধা অর্থাৎ সিনিয়র অফিসার পদে যোগদানের পর যেসব আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন তাদের  মধ‌্যে উল্লেখযো‌গ‌্য হলোঃ

অভিন্দন ভাতাঃ 

একজন সিনিয়র অফিসার বছরের প্রথম দিনে ডিসেম্বর মাসে আহরিত মূলবেতন এর সম পরিমাণ টাকা অভিনন্দন ভাতা পেয়ে থাকেন।

উৎসাহ বোনাসঃ 

গ্রামীণ ব্যাংকের একজন সিনিয়র অফিসার বছরের দ্বিতীয় মাসে এক মাসের মূলবেতন এর সম পরিমাণ টাকা উৎসাহ বোনাস পেয়ে থাকেন। 

উদ্দীপন ভাতাঃ 

গ্রামীণ ব্যাংকের একজন সিনিয়র অফিসার বছরের দ্বিতীয়/তৃতীয় মাসে এক মাসের মূলবেতন এর সম পরিমাণ টাকা উদ্দীপন ভাতা পেয়ে থাকেন। 

বৈশাখী ভাতাঃ 

একজন সিনিয়র অফিসার এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলা নতুন বর্ষ উদযাপন এর জন্য মুল বেতন এর ২০% টাকা বৈশাখী ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকেন।

উৎসব বোনাসঃ

                    ১) গ্রামীণ ব্যাংকের একজন সিনিয়র অফিসার ঈদ-উল-ফিতর এ পরিবার পরিজন এর সাথে ঈদ ‍উদযাপনের জন্য ঈদের ২০দিন আগে এক মাসের  মূলবেতন এর সম পরিমাণ টাকা উৎসব বোনাস পেয়ে থাকেন। 

                ২) গ্রামীণ ব্যাংকের একজন সিনিয়র অফিসার ঈদ-উল-আযহায় পরিবার পরিজন নিয়ে  ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হবার জন্য ঈদের ২০দিন আগে এক মাসের  মূলবেতন এর সম পরিমাণ টাকা উৎসব বোনাস পেয়ে থাকেন। 

বিশেষ সুবিধা ভাতাঃ 

একজন সিনিয়র অফিসার প্রতিমাসে মুল বেতনের ৫% বিশেষ সুবিধা ভাতা পেয়ে থাকেন।[সরকার এটাকে ১৫% এ উন্নীত করার কথা ভাবছে। সরকার দিলে গ্রামীণ ব‌্যাংক ও দিতে আপত্তি করবে না।]

চিকিৎসা ভাতাঃ 

একজন সিনিয়র অফিসার প্রতিমাসে ১৫০০/-(এক হাজার পাঁচশত)টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে থাকেন।

শিক্ষাসহায়ক ভাতাঃ 

গ্রামীণ ব্যাংকের একজন কর্মী তাঁর সন্তানের লেখাপড়া করানোর জন্য প্রতিমাসে একজন সন্তানের জন্য ৫০০/-(পাঁচশত) এবং ২জন সন্তানের জন্য ১০০০/-(এক হাজার)টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতা পেয়ে থাকেন।

অর্জিত ছুটির বদলে বেতনঃ

একজন সিনিয়র অফিসার প্রথম বার ৫ বছর পর এবং এরপর প্রতি তিন বছর পর পর অর্জিত ছুটির বদলে বেতন বাবদ এক মাসের মূল বেতন এর সম-পরিমাণ টাকা ছুটির বদলে বেতন পেয়ে থাকেন।

এক নজরে মাসিক বেতন-ভাতাঃ

গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের বেতন কত?
গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার এর আর্থিক সুযোগ-সুবিধা হিসেবে স্কেল প্রাপ্তির পর প্রথম মাসের বেতন-ভাতা যেরকম হয়ে থাকে তা নিম্নোক্ত ছকে উপস্থান করা হলো।

ক্রমিক নং বিবরণ টাকার পরিমাণ
০১ মূল বেতন ২২০০০
০২ বিশেষ সুবিধা(১০%) ২২০০
০৩ বাড়ীভাড়া(রাজ.সিটি.) ৯৯০০
০৪ চিকিৎসা ভাতা ১৫০০
০৫ যাতায়াত ভাতা ২৫০০
০৬ শিক্ষা ভাতা ৫০০
০৭ মোবাইল ভাতা ৫০০
০৮ টিফিন ভাতা ৬০০
০৯ লাঞ্চসাবসিডি ৮০০০
সর্বমোট  ৪৭৭০০/-
# প্রতি মা‌সের ২৫ তা‌রি‌খে বেতন ভাতা প্রদান করা হ‌য়ে থা‌কে।

গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজার কি কি ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেনঃ

মোটর সাইকেল ও গৃহস্থালী অগ্রীমঃ 

একজন শিক্ষানবিশ অফিসার তাঁর স্কেল কার্যকর হবার সাথে সাথে অর্থাৎ সিনিয়র অফিসার পদে যোগদানের সাথে সাথে ১৪ বেসিক এর সমপরিমাণ টাকা মোটর সাইকেল ও গৃহস্থালী সামগ্রী ঋণ নিতে পারেন।

পিএফ অগ্রীমঃ 

একজন শিক্ষানবিশ অফিসার সিনিয়র অফিসার পদে যোগদানের পর তাঁর পিএফ ফান্ডে জমাকৃত টাকার ৯০% পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন।

জিপিএস অগ্রীমঃ

গ্রামীণ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জিপিএস পরিচালনা করতে পারেন; যার মুনাফার হার ১২% এবং এই জিপিএস হিসারের বিপরীতে ৮০%পর্যন্ত ঋণ সুবিধা নিতে পারেন।

কর্মীগৃহ নির্মান ঋণঃ

গ্রামীণ ব্যাংকের একজন শিক্ষানবিশ অফিসার স্কেল প্রাপ্তির বয়স ১০ বছর পূর্ণ হলে মাত্র ৭% ইন্টারেস্ট এ ৩০,০০,০০০/-(ত্রিশ লক্ষ)টাকা পর্যন্ত কর্মীগৃহ নির্মান ঋণ নিতে পারেন।

পদোন্নতি সংক্রান্তঃ

গ্রামীণ ব‌্যাংকের একজন সহকর্মী সিনিয়র অফিসার পদে যোগদানের ঠিক পরের বছর থেকেই এপ্রিল/অক্টোবর মাসে অটো ইনক্রিমেন্ট পেয়ে থাকেন। সময়ের সাথে কাজের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে নিম্নোক্ত নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। 

০১। সিনিয়র অফিসার থেকে ডেপুটি প্রিন্সিপাল অফিসার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সিনিয়র অফিসার পদে কার্যকাল(সরাসরি/প্রোমোটি) ন‌্যূনতম ০৩বছর ০৬মাস এবং শাখা ব‌্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন ন‌্যূনতম ০৩বছর ০৬মাস। অথবা সিনিয়র অফিসার পদে কার্যকাল ন‌্যূনতম ০৫বছর এবং শাখা ব‌্যবস্থাপকের দায়িত্বকাল ন‌্যূনতম ০১বছর। অথবা সিনিয়র অফিসার পদে কার্যকাল ন‌্যূনতম ০৭বছর।

০২। ডেপুটি প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে প্রিন্সিপাল অফিসার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ডেপুটি প্রিন্সিপাল অফিসার পদে ন‌্যূনতম কার্যকাল ০৪ বছর(সরাসরি/প্রোমোটি)। সরাসরি অফিসার এর ক্ষেত্রে শাখা ব‌্যবস্থাপকের কার্যকাল ন‌্যূনতম ০২ বছর ও প্রোমোটিদের ক্ষেত্রে শাখা ব‌্যবস্থাপকের কার্যকাল ন‌্যূনতম ০৪বছর ০৬মাস । অথবা ডিপিও(সরাসরি/প্রোমোটি)পদে কার্যকাল ন‌্যূনতম ০৭ বছর।

০৩। প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কার্যকাল ন‌্যূনতম ০৫ বছর এবং এরিয়া ম‌্যানেজারের দায়িত্ব পালন, প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কার্যকাল ন‌্যূনতম ০৬ বছর এবং প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে ২ বছর দায়িত্ব পালন।অথবা প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কার্যকাল ন‌্যূনতম ০৭ বছর এবং বিভিন্ন কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন।

০৪। সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার থেকে সহকারী মহাব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কার্যকাল ন্যূনতম ৫ বছর এবং অডিট অফিসারের দায়িত্বে থাকা। সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কার্যকাল ন্যূনতম ৬ বছর এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে ন্যূনতম ৩ বছর দায়িত্ব পালন। অথবা সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কার্যকাল ন্যূনতম ৭ বছর।

পেনশন ও গ্র্যাচুইটি সুবিধাঃ

শিক্ষানবিশ অফিসার থেকে শুরু করে ক্রমাগত পদোন্নতি প্রাপ্তির পর একজন সহকর্মী সরকারী বিধিমালা মোতাবেক ০১ বছর এলপিআর সহ (৫৯ +১)=৬০ বছর চাকুরী করতে পারেন। চাকুরী শেষে ব্যাংকের বিধিমালা অনুযায়ী সার্ভিস বেনিফিট (পেনশন,গ্র্যাচুইটি ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা)অতি অল্প সময়(সর্বোচ্চ ৪৫দিন)এর মধ্যে পেয়ে থাকেন। 

অন্যান্যঃ 

গ্রামীণ ব্যাংকে প্রতি বছর প্রধান কার্যালয় থেকে ১৬টি ক্রাইটেরিয়ায় সেরা শাখা ব্যবস্থাপক, এরিয়া ম্যানেজার,যোনাল ম্যানেজার নির্বাচিত করে পুরস্কৃত করা হয়ে থাকে ।

শারিরীক অক্ষমতা জনিত কারণে একজন সহকর্মী চাইলে চাকুরীকাল সর্বনিম্ন ১০ বছর পূর্ণ হলে স্বেচ্ছায় অবসরে চলে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি বিধিমালা মোতাবেক সার্ভিস বেনিফিট পেয়ে থাকেন।

সতর্কবার্তাঃ 

গ্রামীণ ব্যাংক একটি সুশৃঙ্খল আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলার বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। এখানে তিনটি বিষয়কে অত্যন্ত কঠোরভাবে দেখা হয় -
              ১) আর্থিক অনিয়ম ও আত্মসাৎ।
              ২) নারী/পুরুষ কেলেঙ্কারী জনিত ঘটনা।
              ৩) প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ড।

শেষকথাঃ

গ্রামীণ ব্যাংক, বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। যেহেতু এটি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেহেতু এখানে বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করা অত্যন্ত চ্যালেন্জিং বিষয়। পাশাপাশি এখানে প্রায় ৯০% নারী সদস্য ;যাদের মাধ্যমে দৈনন্দিন লেনদেন সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই নীতি নৈতিকতার বিষয়টিও এখানে মূখ্য ভূমিকা পালন করে।
                                আশাকরি আমার এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ অফিসার এর কাজ ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা কি কি সে বিষয়গুলো সম্বন্ধে পরিস্কার ধারনা পেয়েছেন।পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url