বাথরুম ক্লিন করার ঘরোয়া উপায় | ঝকঝকে ও স্বাস্থ্যকর বাথরুম রাখুন সহজ উপায়ে

বাথরুম হলো এমন একটি স্থান, যেখানে স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। প্রতিদিন ব্যবহারের কারণে এখানে ছড়িয়ে পড়ে টাইলসের দাগ, ফাঙ্গাস, পানি ও সাবানের ছাপ, যা না শুধু ভিজ্যুয়ালি নোংরা দেখায়, বরং ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।

বাজারের অনেক ক্লিনিং প্রোডাক্টে কেমিকেল থাকে, যা হাতের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। তবে চিন্তার কিছু নেই! আমরা ঘরে থাকা সহজ ও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে বাথরুমকে রাখতে পারি ঝকঝকে, দাগমুক্ত এবং দুর্গন্ধমুক্ত।

বাথরুম-ক্লিন-করার-ঘরোয়া-উপায়

বাথরুমের দাগ, দুর্গন্ধ ও ময়লা দূর করার প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপায় জানুন। লেবু, ভিনেগার, বেকিং সোডা ও লবণ ব্যবহার করে কেমিকেল ছাড়াই বাথরুম রাখুন ঝকঝকে ও স্বাস্থ্যকর।

এই ব্লগে জানবো ১৫+ কার্যকর বাথরুম ক্লিন করার ঘরোয়া উপায়, যা অনুসরণ করলে  আপনার বাথরুম থাকবে সতেজ ও স্বাস্থ্যকর।

বাথরুম ক্লিন করার ১৫+ ঘরোয়া উপায়

১.  ভিনেগার ও বেকিং সোডা দিয়ে টাইলস পরিষ্কার করুন

  • বাথরুমের টাইলস, বেসিন ও ওয়াশবেসিনের দাগ দূর করতে ভিনেগার ও বেকিং সোডা মেশান।
  • দাগযুক্ত এলাকায় বেকিং সোডা ছিটিয়ে ৫–১০ মিনিট রাখুন।
  • ভিনেগার স্প্রে করে ব্রাশ দিয়ে ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • নিয়মিত ব্যবহার করলে টাইলস ঝকঝকে থাকবে এবং ফাঙ্গাস কমবে।

২️ .লেবু ও লবণ দিয়ে মজবুত দাগ দূর করুন

  • লেবু কেটে তাতে লবণ মাখিয়ে দাগযুক্ত জায়গা ঘষুন।

  • এটি দাগ তুলতে খুব কার্যকর এবং প্রাকৃতিক রঙও ক্ষতি করে না।

৩. টয়লেট বাউলে বেকিং সোডা ও ভিনেগার ব্যবহার

  • টয়লেট বাউলে আধা কাপ বেকিং সোডা ও আধা কাপ ভিনেগার ঢেলে দিন।

  • ১৫–২০ মিনিট পর ব্রাশ দিয়ে ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

  • দুর্গন্ধ কমে যায় এবং দাগও দূর হয়।

৪. মেঝে পরিষ্কার রাখুন লেবু ও লবণ দিয়ে

  • ফাঙ্গাস বা দাগযুক্ত মেঝেতে লেবুর রস ও লবণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।

  • ১০ মিনিট রেখে ব্রাশ দিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলুন।

৫. প্রাকৃতিক এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করুন

  • লেবুর খোসা, দারুচিনি ও পুদিনা ফোটানো পানি স্প্রে করুন।

  • কোনো রাসায়নিক ছাড়াই বাথরুমে প্রাকৃতিক গন্ধ বজায় থাকে।

৬. ড্রেন পরিষ্কার রাখুন

  • সপ্তাহে একবার ড্রেনে গরম পানি, ভিনেগার ও বেকিং সোডা ঢেলে দিন।
  • এটি ব্লকেজ রোধ করে এবং দুর্গন্ধ দূর করে।

৭. আয়না ও গ্লাস পরিষ্কার করুন

  • আয়না বা গ্লাসে পানির দাগ থাকলে ভিনেগার মিশ্রণ স্প্রে করে কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।

৮.  সাবান দাগ দূর করুন

  • সাবানের দাগ থাকলে টাইলস বা বেসিনে ভিনেগার মিশ্রণ স্প্রে করুন এবং মুছে ফেলুন।

৯. শাওয়ার হেড পরিষ্কার করুন

  • শাওয়ার হেডে কালো দাগ থাকলে ভিনেগারে ডুবিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন।
  • পরে হালকা ব্রাশ দিয়ে ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

১০. বাথরুমের দরজা ও হ্যান্ডেল পরিষ্কার

  • ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে স্প্রে করুন, শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন।

১১. হ্যান্ড টাওয়েল নিয়মিত ধুতে হবে

  • ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি রোধ করতে টাওয়েল সপ্তাহে ২–৩ বার ধুয়ে ফেলুন।

১২. প্রাকৃতিক ক্লিনিং লিকুইড তৈরি করুন

  • ১:১ অনুপাতে ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে স্প্রে বোতলে রাখুন।
  • প্রতিদিন হালকা পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করুন।

১৩. ছোট খেলনা বা বসার জায়গা পরিষ্কার করুন

  • বাথরুমে ছোট জিনিস ও বাচ্চাদের খেলনা রাখলে ভিনেগার দিয়ে হালকা পরিষ্কার করুন।

১৪. নোংরা কার্পেট ও ম্যাট নিয়মিত ধুতে হবে

  • ব্যাকটেরিয়া ও দুর্গন্ধ রোধ করতে সপ্তাহে একবার ধুয়ে শুকনো স্থানে রাখুন।

১৫. রাতের আগে বাথরুম ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করুন

  • ভেজা বা আর্দ্র অবস্থায় ফাঙ্গাস দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

  • রাতের আগে জানালা/ভেন্ট খোলা রাখুন।

বাথরুম-ক্লিন-করার-ঘরোয়া-উপায়


FAQ: বাথরুম ক্লিন করার ঘরোয়া উপায় 

প্রশ্ন ১. প্রতিদিন বাথরুম পরিষ্কার করা কি জরুরি?

উত্তরঃ হ্যাঁ, হালকা দৈনিক পরিষ্কার + সপ্তাহে ২–৩ দিন গভীর পরিষ্কার সবচেয়ে ভালো।

প্রশ্ন ২. ভিনেগার টাইলসের রঙ ক্ষতি করে কি?

উত্তরঃ না, সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করলে টাইলস ঝকঝকে হয় এবং ক্ষতি হয় না।

প্রশ্ন ৩. দুর্গন্ধ দূর করার সহজ উপায় কী?

উত্তরঃ লেবু, ভিনেগার ও গরম পানির মিশ্রণ সবচেয়ে কার্যকর প্রাকৃতিক উপায়।

প্রশ্ন ৪. বাথরুমে ফাঙ্গাস হলে কি করব?

উত্তরঃ ফাঙ্গাস দূর করতে ভিনেগার ও বেকিং সোডা মিশ্রণ ব্যবহার করুন। নিয়মিত বাথরুম শুকনো রাখাও জরুরি।

শেষকথা: বাথরুম রাখুন ঝকঝকে ও স্বাস্থ্যকর

পরিচ্ছন্ন বাথরুম মানেই সুস্থ ও স্বস্তিদায়ক জীবনযাপন। প্রতিদিনের অল্প যত্ন ও ঘরোয়া উপাদানের সঠিক ব্যবহার বাথরুমকে রাখতে পারে একদম নতুনের মতো পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত। লেবু, বেকিং সোডা, ভিনেগার বা লবণের মতো প্রাকৃতিক উপায় শুধু সহজই নয়, বরং পরিবেশবান্ধবও। তাই আজ থেকেই নিয়মিত যত্ন নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং বাথরুমকে রাখুন সবসময় ঝকঝকে, সতেজ ও স্বাস্থ্যকর।

👉 প্রতিদিনের ঘরোয়া টিপস ও স্বাস্থ্য বিষয়ক আরও উপকারী আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুন:

🔗 mamunskblog.com


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url