প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায়
প্রবাসে বা বিদেশে যেতে গেলে আমাদের অনেক সময় টাকা পয়সার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আপনি এক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণের সহায়তা নিতে পারেন। প্রবাসে যেতে কোন ব্যাংক থেকে কিভাবে ঋন নিবেন, কিভাবে পরিশোধ করবেন তার বিস্তারিত যদি জানতে চান ,তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায় তা আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবো।
আমাদের দেশে প্রবাসে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যাংক লোন দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে, আমরা জানবো কিভাবে ব্যাংক থেকে লোন নিতে হয় এবং লোন পাওয়ার প্রক্রিয়া গুলো কি কি।
পেজ সূচীঃ প্রবাসী লোন পাওয়ার বিস্তারিত তথ্য
- প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায়
- কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন পরিষদের নিয়ম
- শেষ কথাঃ প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায়
প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায়
আপনি যদি বিদেশ যেতে বা প্রবাসে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনার
টাকা পয়সার প্রয়োজন হবে। নিজের কাছে নগদ অর্থ না থাকলে আপনাকে হয় কারো
কাছে ধার করতে হবে অথবা আপনার সম্পদ বিক্রি করতে হবে ।এক্ষেত্রে বিভিন্ন
ব্যাংকগুলো আপনাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে পারে। প্রবাসী লোন নিতে গেলে যে
কাগজপত্র এবং যোগ্যতা থাকতে হবে তা হবে তা নিম্নরূপঃ
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
- জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম সনদপত্র
- আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাব বিবরণী
- কমপক্ষে একজন গ্যারান্টার এবং তারও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসার কপি
- কাজের বা চাকরির চুক্তিপত্র
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- এছাড়া অন্যান্য কাগজপত্র যা ব্যাংক চাইব
প্রয়োজনীয় যোগ্যতাঃ
- আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- বয়স সাধারণত ২৫ থেকে ৫৭ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক আয় থাকতে হবে ।
- কিছু ক্ষেত্রে, গ্যারান্টার এর প্রয়োজন হতে পারে।
কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়
প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা প্রবাসীদের
জন্য ঋণ প্রদানকারী কয়েকটি ব্যাংকের তথ্য পেয়েছি, ব্যাংকগুলোর মধ্যে
অন্যতম হলোঃ
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
- সোনালী ব্যাংক
- অগ্রণী ব্যাংক
- পূবালী ব্যাংক এবং কিছু বেসরকারি ব্যাংক যেমন
- এনআরবি ব্যাংক
- এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
- এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক
- অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায় তা জানতে হলে,
উপরোক্ত ডকুমেন্টস্ গুলো সংগ্রহ করার পর নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যাংক
থেকে লোন নেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন।
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে যোগাযোগ করতে হবে।
- তাদের ওয়েবসাইটে অথবা সরাসরি শাখা থেকে ঋণের আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
- আবেদনপত্রটি যথাযথভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
- আবেদনপত্রটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এ জমা দিতে হবে।
- ব্যাংক আপনার আবেদনপত্র যাচাই করে দেখবে এবং যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে ঋণ মঞ্জুর করবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অভিবাসী ঋণ এবং ৫০ লক্ষ
টাকা পর্যন্ত পুনর্বাসন ঋণ দিতে পারে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ঋণ
দিয়ে থাকে, যার মধ্যে অভিবাসী ঋণ এবং পুনর্বাসন ঋণ উল্লেখযোগ্য। অভিবাসী ঋণের
ক্ষেত্রে, নতুন ভিসার জন্য সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা এবং রি-এন্ট্রি ভিসার জন্য ৩
লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যেতে পারে।
অন্যদিকে, পুনর্বাসন ঋণের ক্ষেত্রে,
সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যেতে পারে। এই ঋণের ক্ষেত্রে,
জামানতবিহীন ঋণ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, তবে ৩ লক্ষ টাকার বেশি এবং ৫
লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য সহজ জামানত প্রয়োজন হতে পারে। ৫ লক্ষ টাকার বেশি
ঋণের জন্য, ঋণ গ্রহীতার জামানত হিসেবে স্থাবর সম্পত্তি রেজিস্ট্রি মর্টগেজ করতে
হতে পারে। এছাড়াও, ব্যাংকটি বিদেশ ফেরত কর্মীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য
স্বল্প সুদে ঋণও বিতরণ করে থাকে, যা আত্মকর্মসংস্থানমূলক ঋণ নামে পরিচিত।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন পরিষদের নিয়ম
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ঋণ দিয়ে থাকে, যেমনঃঅভিবাসী ঋণ,
আত্মকর্মসংস্থানমূলক ঋণ, সাধারণ ঋণ ইত্যাদি। প্রতিটি ঋণের জন্য আলাদা নিয়ম ও
শর্ত প্রযোজ্য হতে পারে।
ঋণের মেয়াদ
নতুন ভিসার জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছর এবং রি-এন্ট্রি ভিসার জন্য সর্বোচ্চ ২ বছর হতে
পারে। এছাড়াও আপনার সুনির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুযায়ী, আপনি প্রবাসী কল্যাণ
ব্যাংকের ওয়েবসাইটে (pkb.gov.bd) অথবা স্থানীয় শাখায় যোগাযোগ করে বিস্তারিত
তথ্য জানতে পারেন।
শেষ কথাঃ প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায়
প্রবাসী লোন কিভাবে পাওয়া যায় এই পোস্টের উপরের অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
উল্লেখিত ব্যাংক ছাড়াও বিভিন্ন বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এই সেবা পাওয়া যায়। তবে যে
কোন লোন নেয়ার আগে তার সুদের হার, সার্ভিস চাজ, প্রসেসিং ফি ইত্যাদি সম্পর্কে
অবশ্যই ভালোভাবে জেনে নেয়া উচিৎ। আশাকরি এই লেখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এতক্ষণ
আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url